উচ্চশিক্ষাসুইজারল্যান্ড

সুইজারল্যান্ডে (Switzerland) উচ্চশিক্ষা

Last updated on April 9th, 2021 at 08:11 pm

কেমন আছেন সবাই? আশা করি, ভালো আছেন এবং নিজেকে প্রস্তুত করছেন নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য। 

অনেক দিন পর লিখতে বসলাম, আজকে যে দেশটি নিয়ে লিখতে বসলাম অনেকেই এই দেশটিতে উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ার নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না। ভাবলাম, আজকে লিখেই ফেলি। 

নয়নাভিরাম দৃশ্য যেখানে রয়েছে প্রাকৃতিক ও আধুনিক সৌন্দর্যের ছোঁয়া। আধুনিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, যাকে অনেকেই পৃথিবীর স্বর্গ (ভূ-স্বর্গ) বলে আখ্যায়িত করে থাকেন আজকে আপনাদের সামনে আলোচনা করবো সে দেশে উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ার নিয়ে। দেশটির চারপাশে রয়েছে অসংখ্য পর্বত, রয়েছে ছোট বড় ১৫০০ এর বেশি হ্রদ, আপনি প্রায় ১৬ কিঃমিঃ পরপর হ্রদের দেখা পাবেন। ইতিমধ্যে অনেকেই হয়তো বুঝে ফেলেছেন যে, কোন দেশ নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। হ্যাঁ, আপনি ঠিক ধরেছেন। দেশটির নাম সুইজারল্যান্ড। সুইজারল্যান্ড নিয়ে লিখতে গেলে অনেক কিছুই লেখা যাবে, এর পরিচিতি, নয়নাভিরাম দৃশ্য, শিক্ষা সংস্কৃতি নিয়ে বিস্তারিত লিখতে গেলে বেশ কয়েক ঘণ্টা চলে যাবে, শুধু দেশটি সম্পর্কে বর্ণনা করতেই। তবে একেবারে কিছু না বললেও তো লেখাটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে তাই না! যে দেশে পড়তে যাবো, সে দেশ সম্পর্কেই যদি ভালো করে না হোক মোটামুটি না জানি তাহলে কিভাবে হয়! আমি দেশটি সম্পর্কে খুব বেশি না লিখলেও ছোট করে একটু না বললেই নয়। ইউরোপে যদি বহুভাষার কয়েকটি দেশের নাম উল্লেখ করতে হয় প্রথম দিকেই থাকবে সুইজারল্যান্ডের নাম। দেশটিতে চারটি জাতীয় ভাষা রয়েছে – জার্মান, ফ্রেন্স, ইতালিয়ান ও রোমান্শ। এছাড়া ইংরেজিও খুব জনপ্রিয়। আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে, দেশটির প্রতিটি শিশুর জন্য কমপক্ষে ২টি ভাষা শেখা আবশ্যক এবং সাথে ইংরেজিও শিখতে হয়। সুইজারল্যান্ডকে বলা হয় ‘ওয়াটার টাউয়ার’ যেমনটা আগে বলেছি যে দেশটিতে প্রায় ১৫০০ এরও বেশি হ্রদ রয়েছে। পানি হচ্ছে সে দেশের শক্তির অন্যতম প্রধান উৎস। 


চলুন, দেশটি নিয়ে আরও কিছু জানা যাক।
প্রথম সৌর সংগ্রাহক (Solar Collector) উদ্ভাবন করা হয় সুইজারল্যান্ডেই। ১৭৬৭ এর মধ্যে সুইস বিজ্ঞানী ‘হোরেস বেনেডিক্ট ডি সসুর’ ইতিমধ্যে প্রথম সৌর সংগ্রাহক উদ্ভাবন করেছিলেন – একটি উত্তাপযুক্ত বাক্সের কাঁচের তিনটি স্তর দ্বারা আবৃত সূর্যের আলো শোষণ করে এবং ১১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা তৈরি করে। ২০১০ সালে, অধ্যাপক মাইকেল গ্রাটজেলকে (ইপিএফএল) স্বল্প মূল্যের সোলার সেল আবিষ্কারের জন্য মিলেনিয়াম প্রযুক্তি পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল যা আলোকসংশ্লেষকে নকল করে বিদ্যুৎ উত্পাদিত উইন্ডো তৈরি করতে ব্যবহৃত হতে পারে। সৌরবিদ্যুতের কথা বললে আপনি সোলার ইমপালসের কথা শুনে থাকতে পারেন, একটি সুইস দূরপাল্লার পরীক্ষামূলক সৌর-চালিত বিমান যা ২০১৫-২০১৬ সালে পৃথিবীটিকে অবরুদ্ধ করেছিল। এটি সুইস এক্সপ্লোরার আন্দ্রে বোশবার্গ এবং বার্ট্র্যান্ড পিককার্ড দ্বারা চালিত হয়েছিল। সোলার ইমপুলস ১৭ টি বিশ্ব রেকর্ড ধারণ করেছে এবং প্রমাণ করেছে যে পরিষ্কার প্রযুক্তি সত্যিই অসম্ভবকে অর্জন করতে পারে।

সুইজারল্যান্ড মানেই সব পাহাড় নয়, যেমন দক্ষিণে আপনি সহজেই টিকিনোর ক্যান্টনে খেজুর গাছ দেখতে পাবেন। ভাবছেন, আমি সেখানে কিভাবে প্রবেশ করব? কোন চিন্তা নেই, সে ব্যবস্থাও তারা করে রেখেছেন, ২০১৭ সাল থেকে সুইজারল্যান্ড একটি ইঞ্জিনিয়ারিং মাস্টারপিস হিসাবে বিশ্বের দীর্ঘতম টানেলের তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে সে পথ ধরে আপনি চলে যেতে পারেন। গোথার্ড টানেল দৈর্ঘ্যে ৫৭ কিলোমিটার এবং আল্পসের নিচে ২.৩ কিঃমিঃ। এটি তৈরি করতে ১৭ বছর সময় লেগেছিল। মাস্টারপিসটি সুইস বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দক্ষতায় এটি নির্মিত হয়েছিল।

আপনি কি পাহাড়-পর্বতে আরোহণ করতে পছন্দ করেন? ২,০০০ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট ৪,৪০০ টিরও বেশি পাহাড় রয়েছে এই দেশে, এর মধ্যে ২৪ টি ৪,০০০ মিটারেরও বেশি। সর্বাধিকটি হল – ম্যাটোরহর্ন নয় – মন্টি রোজা (ডুফর্সপিটজ) সুইস / ইতালীয় সীমান্তে ৪,৬৩৪ মিটারে অবস্থিত। মহাকাব্য ল্যান্ডস্কেপগুলি প্রায়শই ভারতীয় বলিউড ফিল্মিং ইন্ডাস্ট্রির লোকেশন হিসাবে ব্যবহৃত হয়। প্রতিবছর প্রায় ৮০০ টি বলিউড চলচ্চিত্রের শুটিং সুইজারল্যান্ডে করা হয় যা ভারতের বাইরে অন্য যে কোনও দেশের চেয়ে বেশি।

সুইজারল্যান্ড ঘড়ির জন্যও কম পরিচিত নয়! যারা ঘড়ি ব্যবহার করেন তারা অনেকেই Rolex, Cartier, Omega, Longines, Tissot, TAG Heuer, Swatch নামগুলোর সাথে পরিচিত। এসবই সুইস ব্র্যান্ড। ‘সুইস বাংক’ এর কথা কে না জানে! বিশ্বের অনেক অনেক কোটিপতিরা টাকা রাখেন এই ব্যাংকে। বিখ্যাত এই ব্যাংক এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের ব্যাসেল এ অবস্থিত। 



এবার একটু আবহাওয়া নিয়ে জানি,

ইউরোপের বেশিরভাগ দেশেই প্রধান সমস্যা হচ্ছে শীত। তবে সুইজারল্যান্ডের জলবায়ু কেবল তুষার এবং বরফ এর সাথেই সম্পর্কযুক্ত নয় – শীত, তুষার শীতকালীন শীত আসে এবং যায় তবে আপনি দেখতে পাবেন যে গ্রীষ্মে সুইস মালভূমিতে তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশিও হতে পারে।

সৌন্দর্য, আবহাওয়া নিয়ে তো জানা হল। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কেন বাদ যাবে! চলুন একটু জেনে নেই – 

আলবার্ট আইনস্টাইন এর নাম তো অনেকেই শুনেছেন, মূল আপেক্ষিকতা আসলে তাত্ত্বিকভাবে আলবার্ট আইনস্টাইন দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল, যিনি সুইজারল্যান্ডে তাঁর আপেক্ষিকতত্ত্ব (  ) তৈরি করেছিলেন। জার্মান সেনাবাহিনীতে সামরিক দায়িত্ব এড়াতে তার জার্মান নাগরিকত্ব ত্যাগ করে তিনি সুইস পাসপোর্টের জন্য সফলভাবে আবেদন করেছিলেন। তিনি তার আপেক্ষিকতা তত্ত্বটি আবিস্কার করেছিলেন – তাঁর বিখ্যাত সূত্র   – বার্নে অধ্যয়নরত এবং বসবাসের সময়।

জেনেভা ভিত্তিক বিশ্বের বৃহত্তম কণা পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষাগার CERN না থাকলে আপনি সম্ভবত এটি পড়তে পারবেন না। এই যে আজকে আমরা অনলাইনে এতো কিছু পড়ি, সবকিছুই কিন্তু WWW এর সাথেই সম্পর্কিত। টিম বার্নার্স-লি ১৯৮৯ সালে সেখানে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (WWW) আবিষ্কার করেছিলেন। বিখ্যাত টেক জায়ান্ট গুগল এর অফিসও রয়েছে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে।

অনেক তো জানলাম। কিন্তু দেশটির অবস্থান কোথায়! তাহলে চলুন, এবার দেশটির অবস্থানগত কিছু তথ্য জেনে নেই – 

সুইজারল্যান্ড, সরকারীভাবে সুইস কনফেডারেশন, একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র, পশ্চিম, মধ্য এবং দক্ষিণ ইউরোপের সংমিশ্রণে অবস্থিত। এটি একটি ফেডারেল প্রজাতন্ত্র, যেখানে ২ টি সেনানিবাস গঠিত, ফেডারেল কর্তৃপক্ষ বার্নে বসে। সুইজারল্যান্ড হ’ল একটি আবদ্ধ দেশ, যা দক্ষিণে ইতালি, পশ্চিমে ফ্রান্স, উত্তরে জার্মানি এবং পূর্বে অস্ট্রিয়া ও লিচটেনস্টেইনের সীমানা দ্বারা বেষ্টিত। এটি সেঞ্জেনভুক্ত দেশ। এটি ভৌগোলিকভাবে আল্পস, সুইস মালভূমি এবং জুরার মধ্যে বিভক্ত, মোট আয়তন ৪১,২৮৫ বর্গ কিঃমিঃ। আল্পস এই অঞ্চলের বৃহত্তর অংশ দখল করায়, প্রায় ৮.৫ মিলিয়ন সুইস জনসংখ্যার বেশিরভাগই মালভূমিতে কেন্দ্রীভূত হয়, যেখানে বৃহত্তম শহরগুলি অবস্থিত, এর মধ্যে জুরিখ এবং জেনেভা অর্থনৈতিক কেন্দ্র এবং দুটি বড় শহর। বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশের তালিকায় সুইজারল্যান্ডের নাম প্রথম দিকেই থাকে। দেশটির মুদ্রার নাম সুইস ফ্রাংক। উল্লেখ্য, ১ সুইস ফ্রাংক = ৮৫ – ৯২ টাকা (পরিবর্তনশীল)। 

পড়তে পড়তে হয়তো অনেকেই দেশটির প্রেমে পড়ে গিয়েছেন, ভাবছেন ইশ! যদি এই দেশটাতে পড়তে পারতাম, কতই না ভালো হতো! তাহলে আর দেরি কেন! চলুন এবার একে একে উচ্চশিক্ষায় কিভাবে যাওয়া যায়, কিভাবে ক্যারিয়ার গড়া যায়, সেজন্য কি কি লাগবে – সেগুলো বিস্তারিত জেনে নেই।

ও, তার আগে দেশটি উচ্চশিক্ষায় কেমন, মান কেমন তা তো জানা লাগবে। সুইজারল্যান্ড এর শিক্ষার মান বেশ উঁচু মানের এবং সুইস ডিগ্রি সারা বিশ্বে স্বীকৃত। রয়েছে বেশকিছু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চশিক্ষার জন্য সুইজারল্যান্ড নিঃসন্দেহে একটি অন্যতম সেরা জায়গা। দেশটি ইতিমধ্যেই ৩৫ টি নোবেল তাদের ঘরে তুলে নিয়েছে।

ইআরসি (ERC) তহবিলের জন্য ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় (ইউরোপীয় গবেষণা কাউন্সিল) খুব উচ্চ সাফল্যের হার দেখায় সুইস গবেষকরা। ২০০৭ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সুইজারল্যান্ডের গড় সাফল্যের হার ২৩ শতাংশ সহ একটি বড় নেতৃত্বে ছিল। অন্যান্য দেশগুলি ১৬ শতাংশ অনুসরণ করেছে।

দেশটিতে বেশকিছু প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, এগুলোর মধ্যে ETH Zurich (13th), École Polytechnique Fédérale de Lausanne (38th), University of Zurich (90th), University of Basel (94th), University of Bern (113th) অন্যতম। দেশটিতে তিন ধরণের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, এগুলো হলঃ

UNIVERSITY

UNIVERSITY OF APPLIED SCIENCES AND ARTS

UNIVERSITY OF TEACHER EDUCATION

সকল সুইস বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা এখানে পাবেনঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাচেলর্স (৩ বছর মেয়াদী), মাস্টার্স (১.৫-২ বছর মেয়াদী), পিএইচডি (৩-৫ বছর মেয়দী), ও অন্যান্য প্রোগ্রাম অফার করে থাকে।

কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কিছুটা বেশি টিউশন ফি নেয়। কার্যত সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য, আপনাকে প্রতি সেমিস্টারে ৫০০ সুইস ফ্রাংক এবং ২০০০ সুইস ফ্রাংক এর মধ্যে অর্থ প্রদান করতে হতে পারে। মনে রাখবেন যে আরও ছোট ছোট ফি থাকতে পারে: নিবন্ধন ফি; পরীক্ষার ফি; সেমিস্টার ফি; সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া, গ্রন্থাগারের ব্যবহারের জন্য ফি; ছাত্র সমিতি ইত্যাদির জন্য ফি দিতে হতে পারে। ১ সুইস ফ্রাংক = ৯২ বাংলাদশী টাকা বা এর আশেপাশে হয়ে থাকে।

ধাপে ধাপে ভর্তির প্রক্রিয়া

ধাপ – ১ঃ প্রোগ্রাম ও বিশ্ববিদ্যালয় খোঁজা। এই ডাটা বেইজে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ধরণ, মাধ্যম ও প্রোগ্রাম খুঁজতে পারেনঃ প্রোগ্রাম খোঁজার অফিসিয়াল ডাটা বেইজ

ধাপ – ২ঃ ভর্তির যোগ্যতাবলী দেখে নেওয়া।

সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পদ্ধতি নেই। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত এবং নিজস্ব ভর্তির মানদণ্ড নির্ধারণ করে। নির্দিষ্ট তথ্যের জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তির বিষয়ে কিছু সাধারণ তথ্য এখানে দেওয়া হল:

স্নাতক প্রোগ্রামে ভর্তি: অবশ্যই এইচএসসি পাশ থাকতে হবে। আরও দেখুনঃ এখানে

মাস্টার্সের প্রোগ্রামে ভর্তি: যে কোন একটি অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি। আরও দেখুনঃ এখানে

ডক্টরাল/পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি: যে কোন একটি অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। ভাষার প্রয়োজনীয়তা: শিক্ষার ভাষা সম্পর্কে ভাল জ্ঞান হ’ল সফল অধ্যয়নের পূর্বশর্ত। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশের ভাষা সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য নীচে ৩য় ধাপ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফাইলগুলি দেখুন।

যদিও সুইজারল্যান্ডে ইংরেজি মাধ্যমে স্নাতক করার সুযোগ সীমিত, তবে যেগুলোতে আছে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিষয় ভেদে

আইইএলটিএস ৬.৫ – ৭ লাগতে পারে। আবেদনের সময়সীমা বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। 

ধাপ – ৩ঃ আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনের সময়সীমা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ভর্তি পদ্ধতি এবং তালিকাভুক্তির বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য সরবরাহ করবে। ধরণ অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাঃ এখানে দেখুন

স্কলারশিপঃ
সুইজারল্যান্ডে বিভিন্ন ক্যাটাগরিরি স্কলারশিপ রয়েছে। বিস্তারিতঃ এখানে দেখুন

ভর্তি হয়ে গেলেন। এবার ভিসা আবেদনের সময়। চলুন এবার ধাপে ধাপে ভিসার জন্য আবেদন সম্পর্কে তা জেনে নেই।


ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী

সবচেয়ে ভালো খবর হচ্ছে সুইস এমব্যাসি বানলাদেশে থাকায় আপনাকে ভিসা আবেদনের জন্য ভারতে যেতে হবে না, যেটা অধিকাংশ দেশের জন্যই প্রয়োজন হয়। যেহেতু আপনি ইইউ সদস্যভুক্ত দেশের কেউ নন, তাই আপনাকে ন্যাশনাল ভিসার (ডি ভিসা) জন্য সুইস এমব্যাসি ঢাকা তে আবেদন করতে হবে।

ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ

  • পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম (ডাউনলোড করুন) , আবেদনকারীর স্বাক্ষর সহ পাসপোর্ট সাইজ ছবি (৬ মাসের পুরনো নয়) – ছবি সম্পর্কে
  • আরও একটি অতিরিক্ত পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • পাসপোর্ট (পুরাতন সহ, যদি থাকে)
  • বর্তমান পাসপোর্ট এর ফটোকপি (প্রতিটি আবেদন ফর্ম এর জন্য)
  • সিভি ও মোটিভেশন লেটার
  • সকল একাডেমিক কাগজপত্র
  • অফার লেটার (সুইস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সত্যায়িত)
  • ঘোষণা পত্র যে, আপনি পড়াশোনা শেষে নিজ দেশে ফিরে আসবেন।
  • আর্থিক সচ্ছলতা (নিজ ব্যাংক একাউন্টে ২১০০০ সুইস ফ্রাংক এর সম পরিমাণ টাকা, সূত্রঃ https://www.uzh.ch/cmsssl/en/studies/application/entry/guidelines.html টাকা বাংলাদেশে অবস্থিত কোন ব্যাংক যার শাখা সুইজারল্যান্ডে আছে অথবা বাংলাদেশ অবস্থিত কোন সুইস ব্যাংকের শাখায় রাখতে হবে)
  • স্পন্সর কর্তৃক হলফনামা (এফিড্যাভিট), যেখানে লেখা থাকবে যে, স্পন্সর আপনার সুইজারল্যান্ডে পড়াশোনাকালীন সকল খরচ বহন করবেন। 
  • আয়ের উৎস (১২ মাসের ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট/সনদ, ইনকাম ট্যাক্স পেপার, ফিক্সড জামানত ইত্যাদি)
  • যদি ব্যাংক লোন হয় (ব্যাংককে নিশ্চিত পত্র ইস্যু করতে হবে)
  • কমপক্ষে ১ বছরের টিউশন ফি পরিশোধের প্রমাণ কপি
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা পরিক্ষায় পাশের নিশ্চিত পত্র
  • সাম্প্রতিক আইইএলটিএস পরিক্ষার সনদ

বিশেষ প্রয়োজনে এমব্যাসি অতিরিক্ত কাগজ চাইতে পারে।

সকল কাগজ অবশ্যই অরিজিনাল দিতে হবে। যাচাইয়ের পরে গুরুত্বপূর্ণগুলো ফেরত দিয়ে দিবে। সকল কাগজ ক্লিপ দিয়ে সংযুক্ত করে দিতে হবে, স্ট্যাপল নয়। ২ সেট (অরিজিনাল ও ১ সেট ফটোকপি) দিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ কাগজগুলোর (শিক্ষা সনদ ইত্যাদি)  আলাদা ফটোকপি সেট দিতে হবে। 

সকল কাগজ এমব্যাসি সুইজারল্যান্ডের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবে। সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত জানানো হবে এমব্যাসিকে। ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ৮-১২ সপ্তাহ সময় নিতে পারে। 


স্পাউস/ফ্যামিলি ভিসা সম্পর্কে জানতে এখানে দেখুনঃ ডাউনলোড করুন

আরও বিস্তারিত জানতে এমব্যাসির ওয়েবসাইট ভিজিট করুনঃ ওয়েবসাইট

সুইস এমব্যাসি বাংলাদেশ, এর ঠিকানা –

Embassy of Switzerland
Bay’s Edgewater
8th Floor, Plot 12
North Avenue, Gulshan 2
Dhaka 1212
Bangladesh

Phone
Headquarters +880 255 051 601

Fax
Headquarters +880 255 051 614

for visa matters dhaka.visa@eda.admin.ch
For other matters dhaka@eda.admin.ch

ভিসা তো হয়ে গেলো। এবার চিল করেন। থামেন ভাই/বোন। আসল জিনিসই তো জানা হল না! কি সেটা! হুম, কাজ এর ব্যাপারে জানা লাগবে না! তা না হলে কি চলে! তাছাড়া কেমন খরচ হয় থাকতে গেলে এটাও তো জানা জরুরী, অবশ্য এগুলো আপনাকে আগেই জেনে নিতে হবে, তারপরে বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিবেন, তাই না? আচ্ছা যাই হোক, চলুন এবার একটু কাজ-কাম, খরচপাতির দিকে যাই – 

সুইজারল্যান্ড খুবই ব্যয়বহুল দেশ। থাকা-খাওয়া বাবদ আপনাকে কমপক্ষে ৭০০ – ১০০০ ইউরো গুনতে হবে। অবশ্য এটা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। বিদেশী শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টা কাজের অনুমতি পেয়ে থাকে। তবে সামারে ফুল টাইম কাজ করতে পারবেন। সুইজারল্যান্ডে অবস্থানের পর কাজের অনুমতির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতে হবে এবং ৬ মাস পরে কাজের অনুমতি পাবেন। অর্থাৎ ৬ মাস পর্যন্ত কোন কাজ করতে পারবেন না। যেহেতু সুইজারল্যান্ড সেঞ্জেনভুক্ত দেশ তাই, এর ভিসা দিয়ে আপনি যে কোন সেঞ্জেনভুক্ত দেশে যেতে পারবেন এবং অনধিক ৯০ দিন থাকতে পারবেন। পড়াশোনা শেষে চাকুরি খোঁজার জন্য ৬ মাসের ভিসা দেওয়া হয়। 

তাহলে আজ এ পর্যন্তই। সকলের জন্য শুভ কামনা জানিয়ে আজকের লেখার এখানেই ইতি টানছি। বেঁচে থাকলে সামনে অন্য কোন লেখা নিয়ে হাজির হব। সে পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন। আল্লাহ্‌ হাফেজ। 

তথ্যসূত্রঃ

https://www.studyinswitzerland.plus/

https://www.swissuniversities.ch/en/

https://www.eda.admin.ch/countries/bangladesh/en/home.html

 

লেখকঃ মেহেদী হাসান

ফেসবুক মন্তব্য
Mahedi Hasan
 
শেয়ার করুনঃ

Mahedi Hasan

স্বপ্নবাজ ও ভ্রমণপিপাসু একজন মানুষ। নতুন কিছু জানতে ও শিখতে ভালো লাগে। নিজে যা জানি তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। বর্তমানে জার্মানিতে পড়াশোনা করছি।আমার সম্পর্কেঃ http://www.hmahedi.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 5 =

Upcoming Events